সূরা আস-সাফ্ফাত এর বাংলা অনুবাদ

বেসিক সূরা তথ্য

সূরা নম্বর – 37
আয়াত সংখ্যা – 182
প্রকাশিত শহর – মক্কা
পারা বিবরণ – পারা 23 আয়াত 1-182
প্রারম্ভিক পৃষ্ঠা সংখ্যা – 446 তম পৃষ্ঠা

সূরা আস-সাফ্ফাতের সারাংশ

সূরা আস-সাফ্ফাত, যার অর্থ “যারা স্থান নির্ধারণ করে” বা “যারা ব্যবস্থা করে” এটি কুরআনের 37তম সূরা। এটি 182টি শ্লোক নিয়ে গঠিত এবং প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন নবীদের গল্প, তাদের সংগ্রাম এবং অবিশ্বাসের পরিণতির উপর আলোকপাত করে৷

সূরাটি আসমান ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে ঐশ্বরিক আদেশ এবং নির্ভুলতা তুলে ধরে শুরু হয়েছে। এটি সমস্ত কিছুর উপর আল্লাহর ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দেয় এবং বিশ্বাসীদের আশ্বস্ত করে যে অবিশ্বাসীরা শেষ পর্যন্ত তাদের কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।

সূরা আস-সাফ্ফাত নূহ, ইব্রাহিম, মুসা এবং ইউনুস (আঃ) সহ বেশ কয়েকজন নবীর কাহিনী বর্ণনা করে। এটি তাদের অটল বিশ্বাস এবং বিরোধিতা এবং অবিশ্বাসের মুখে একেশ্বরবাদের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাদের উত্সর্গকে তুলে ধরে।

সুরাটি প্রতিকূলতার মুখে নবীদের দৃঢ়তা ও ধৈর্য এবং বিশ্বাসে অবিচল থাকার গুরুত্বের উপর জোর দেয়। এটি নবীদের বার্তা প্রত্যাখ্যান করার পরিণতির বিরুদ্ধে সতর্ক করে এবং পরকালে জবাবদিহিতার অনিবার্যতার উপর জোর দেয়।

সূরা আস-সাফ্ফাত ঐশ্বরিক আদেশের ধারণা নিয়ে আলোচনা করে এবং জোর দেয় যে সবকিছু আল্লাহর পরিকল্পনা ও প্রজ্ঞা অনুসারে ঘটে। এটি বিশ্বাসীদের আশ্বস্ত করে যে তারা তাদের বিশ্বাস এবং ধার্মিকতার জন্য পুরস্কৃত হবে, যখন অবিশ্বাসীরা তাদের সত্যকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য শাস্তির সম্মুখীন হবে৷

সূরাটি পুনরুত্থান এবং বিচার দিবসের ধারণাকেও স্পর্শ করে। এটি পুনরুত্থানের দৃশ্য এবং জবাবদিহির জন্য আল্লাহর সামনে সমস্ত প্রাণীর একত্রিত হওয়ার বর্ণনা দেয়। এটি সেই দিনে সমস্ত ব্যক্তির সমতা এবং পুরষ্কার এবং শাস্তির ন্যায্য বন্টনের উপর জোর দেয়৷

সূরা আস-সাফ্ফাত শেষ হয়েছে মুমিনদের প্রতি আল্লাহর মহত্ত্ব এবং তাঁর করুণা তুলে ধরে। এটি বিশ্বাসীদের আশ্বস্ত করে যে তাদের প্রচেষ্টা বৃথা যাবে না এবং তাদের বিশ্বাস এবং ভাল কাজের পুরস্কার হিসাবে তাদের জান্নাত দেওয়া হবে।

সংক্ষেপে, সূরা আস-সাফফাত বিভিন্ন নবীদের কাহিনী এবং অবিশ্বাসের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রামের উপর আলোকপাত করে। এটি প্রতিকূলতার মুখে বিশ্বাস, ধৈর্য এবং অধ্যবসায়ের গুরুত্ব তুলে ধরে। সূরাটি ঐশ্বরিক আদেশের ধারণা, পরকালে জবাবদিহিতার অনিবার্যতা এবং বিশ্বাসীদের জন্য পুরস্কার এবং অবিশ্বাসীদের জন্য শাস্তির প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়। এটি আল্লাহর শক্তি ও ন্যায়বিচারের অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে এবং বিশ্বাসীদেরকে তাদের বিশ্বাসে অবিচল থাকতে উৎসাহিত করে।

বাংলায় সূরা আস-সাফ্ফাতের অনুবাদিত সংস্করণ পড়ুন

Bismillahir Rahmanir Rahim

1. শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো,

2. অতঃপর ধমকিয়ে ভীতি প্রদর্শনকারীদের,

3. অতঃপর মুখস্থ আবৃত্তিকারীদের-

4. নিশ্চয় তোমাদের মাবুদ এক।

5. তিনি আসমান সমূহ, যমীনও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা এবং পালনকর্তা উদয়াচলসমূহের।

6. নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি।

7. এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।

8. ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয়।

9. ওদেরকে বিতাড়নের উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি।

10. তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।

11. আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আমি অন্য যা সৃষ্টি করেছি? আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এঁটেল মাটি থেকে।

12. বরং আপনি বিস্ময় বোধ করেন আর তারা বিদ্রুপ করে।

13. যখন তাদেরকে বোঝানো হয়, তখন তারা বোঝে না।

14. তারা যখন কোন নিদর্শন দেখে তখন বিদ্রূপ করে।

15. এবং বলে, কিছুই নয়, এযে স্পষ্ট যাদু।

16. আমরা যখন মরে যাব, এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?

17. আমাদের পিতৃপুরুষগণও কি?

18. বলুন, হ্যাঁ এবং তোমরা হবে লাঞ্ছিত।

19. বস্তুতঃ সে উত্থান হবে একটি বিকট শব্দ মাত্র-যখন তারা প্রত্যক্ষ করতে থাকবে।

20. এবং বলবে, দুর্ভাগ্য আমাদের! এটাই তো প্রতিফল দিবস।

21. বলা হবে, এটাই ফয়সালার দিন, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে।

22. একত্রিত কর গোনাহগারদেরকে, তাদের দোসরদেরকে এবং যাদের এবাদত তারা করত।

23. আল্লাহ ব্যতীত। অতঃপর তাদেরকে পরিচালিত কর জাহান্নামের পথে,

24. এবং তাদেরকে থামাও, তারা জিজ্ঞাসিত হবে;

25. তোমাদের কি হল যে, তোমরা একে অপরের সাহায্য করছ না?

26. বরং তারা আজকের দিনে আত্নসমর্পণকারী।

27. তারা একে অপরের দিকে মুখ করে পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

28. বলবে, তোমরা তো আমাদের কাছে ডান দিক থেকে আসতে।

29. তারা বলবে, বরং তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না।

30. এবং তোমাদের উপর আমাদের কোন কতৃত্ব ছিল না, বরং তোমরাই ছিলে সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।

31. আমাদের বিপক্ষে আমাদের পালনকর্তার উক্তিই সত্য হয়েছে। আমাদেরকে অবশই স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।

32. আমরা তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিলাম। কারণ আমরা নিজেরাই পথভ্রষ্ট ছিলাম।

33. তারা সবাই সেদিন শান্তিতে শরীক হবে।

34. অপরাধীদের সাথে আমি এমনি ব্যবহার করে থাকি।

35. তাদের যখন বলা হত, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য েনই, তখন তারা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত।

36. এবং বলত, আমরা কি এক উম্মাদ কবির কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব।

37. না, তিনি সত্যসহ আগমন করেছেন এবং রসূলগণের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

38. তোমরা অবশ্যই বেদনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করবে।

39. তোমরা যা করতে, তারই প্রতিফল পাবে।

40. তবে তারা নয়, যারা আল্লাহর বাছাই করা বান্দা।

41. তাদের জন্যে রয়েছে নির্ধারিত রুযি।

42. ফল-মূল এবং তারা সম্মানিত।

43. নেয়ামতের উদ্যানসমূহ।

44. মুখোমুখি হয়ে আসনে আসীন।

45. তাদেরকে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ পানপাত্র।

46. সুশুভ্র, যা পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু।

47. তাতে মাথা ব্যথার উপাদান নেই এবং তারা তা পান করে মাতালও হবে না।

48. তাদের কাছে থাকবে নত, আয়তলোচনা তরুণীগণ।

49. যেন তারা সুরক্ষিত ডিম।

50. অতঃপর তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

51. তাদের একজন বলবে, আমার এক সঙ্গী ছিল।

52. সে বলত, তুমি কি বিশ্বাস কর যে,

53. আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনও কি আমরা প্রতিফল প্রাপ্ত হব?

54. আল্লাহ বলবেন, তোমরা কি তাকে উকি দিয়ে দেখতে চাও?

55. অপর সে উকি দিয়ে দেখবে এবং তাকে জাহান্নামের মাঝখানে দেখতে পাবে।

56. সে বলবে, আল্লাহর কসম, তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংসই করে দিয়েছিলে।

57. আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ না হলে আমিও যে গ্রেফতারকৃতদের সাথেই উপস্থিত হতাম।

58. এখন আমাদের আর মৃত্যু হবে না।

59. আমাদের প্রথম মৃত্যু ছাড়া এবং আমরা শাস্তি প্রাপ্তও হব না।

60. নিশ্চয় এই মহা সাফল্য।

61. এমন সাফল্যের জন্যে পরিশ্রমীদের পরিশ্রম করা উচিত।

62. এই কি উত্তম আপ্যায়ন, না যাক্কুম বৃক্ষ?

63. আমি যালেমদের জন্যে একে বিপদ করেছি।

64. এটি একটি বৃক্ষ, যা উদগত হয় জাহান্নামের মূলে।

65. এর গুচ্ছ শয়তানের মস্তকের মত।

66. কাফেররা একে ভক্ষণ করবে এবং এর দ্বারা উদর পূর্ণ করবে।

67. তদুপরি তাদেরকে দেয়া হবে। ফুটন্ত পানির মিশ্রণ,

68. অতঃপর তাদের প্রত্যাবর্তন হবে জাহান্নামের দিকে।

69. তারা তাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছিল বিপথগামী।

70. অতঃপর তারা তদের পদাংক অনুসরণে তৎপর ছিল।

71. তাদের পূর্বেও অগ্রবর্তীদের অধিকাংশ বিপথগামী হয়েছিল।

72. আমি তাদের মধ্যে ভীতি প্রদর্শনকারী প্রেরণ করেছিলাম।

73. অতএব লক্ষ্য করুন, যাদেরকে ভীতিপ্রদর্শণ করা হয়েছিল, তাদের পরিণতি কি হয়েছে।

74. তবে আল্লাহর বাছাই করা বান্দাদের কথা ভিন্ন।

75. আর নূহ আমাকে ডেকেছিল। আর কি চমৎকারভাবে আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম।

76. আমি তাকে ও তার পরিবারবর্গকে এক মহাসংকট থেকে রক্ষা করেছিলাম।

77. এবং তার বংশধরদেরকেই আমি অবশিষ্ট রেখেছিলাম।

78. আমি তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয় রেখে দিয়েছি যে,

79. বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।

80. আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।

81. সে ছিল আমার ঈমানদার বান্দাদের অন্যতম।

82. অতঃপর আমি অপরাপর সবাইকে নিমজ্জত করেছিলাম।

83. আর নূহ পন্থীদেরই একজন ছিল ইব্রাহীম।

84. যখন সে তার পালনকর্তার নিকট সুষ্ঠু চিত্তে উপস্থিত হয়েছিল,

85. যখন সে তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা কিসের উপাসনা করছ?

86. তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত মিথ্যা উপাস্য কামনা করছ?

87. বিশ্বজগতের পালনকর্তা সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কি?

88. অতঃপর সে একবার তারকাদের প্রতি লক্ষ্য করল।

89. এবং বললঃ আমি পীড়িত।

90. অতঃপর তারা তার প্রতি পিঠ ফিরিয়ে চলে গেল।

91. অতঃপর সে তাদের দেবালয়ে, গিয়ে ঢুকল এবং বললঃ তোমরা খাচ্ছ না কেন?

92. তোমাদের কি হল যে, কথা বলছ না?

93. অতঃপর সে প্রবল আঘাতে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।

94. তখন লোকজন তার দিকে ছুটে এলো ভীত-সন্ত্রস্ত পদে।

95. সে বললঃ তোমরা স্বহস্ত নির্মিত পাথরের পূজা কর কেন?

96. অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে এবং তোমরা যা নির্মাণ করছ সবাইকে সৃষ্টি করেছেন।

97. তারা বললঃ এর জন্যে একটি ভিত নির্মাণ কর এবং অতঃপর তাকে আগুনের স্তুপে নিক্ষেপ কর।

98. তারপর তারা তার বিরুদ্ধে মহা ষড়যন্ত্র আঁটতে চাইল, কিন্তু আমি তাদেরকেই পরাভূত করে দিলাম।

99. সে বললঃ আমি আমার পালনকর্তার দিকে চললাম, তিনি আমাকে পথপ্রদর্শন করবেন।

100. হে আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে এক সৎপুত্র দান কর।

101. সুতরাং আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দান করলাম।

102. অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন।

103. যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল।

104. তখন আমি তাকে ডেকে বললামঃ হে ইব্রাহীম,

105. তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

106. নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।

107. আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু।

108. আমি তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি যে,

109. ইব্রাহীমের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।

110. এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

111. সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন।

112. আমি তাকে সুসংবাদ দিয়েছি ইসহাকের, সে সৎকর্মীদের মধ্য থেকে একজন নবী।

113. তাকে এবং ইসহাককে আমি বরকত দান করেছি। তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মী এবং কতক নিজেদের উপর স্পষ্ট জুলুমকারী।

114. আমি অনুগ্রহ করেছিলাম মূসা ও হারুনের প্রতি।

115. তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়কে উদ্ধার করেছি মহা সংকট থেকে।

116. আমি তাদেরকে সাহায্য করেছিলাম, ফলে তারাই ছিল বিজয়ী।

117. আমি উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব।

118. এবং তাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করেছিলাম।

119. আমি তাদের জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয় রেখে দিয়েছি যে,

120. মূসা ও হারুনের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।

121. এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

122. তারা উভয়েই ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্যতম।

123. নিশ্চয়ই ইলিয়াস ছিল রসূল।

124. যখন সে তার সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি ভয় কর না ?

125. তোমরা কি বা’আল দেবতার এবাদত করবে এবং সর্বোত্তম স্রষ্টাকে পরিত্যাগ করবে।

126. যিনি আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের পালনকর্তা?

127. অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। অতএব তারা অবশ্যই গ্রেফতার হয়ে আসবে।

128. কিন্তু আল্লাহ তা’আলার খাঁটি বান্দাগণ নয়।

129. আমি তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়ে রেখে দিয়েছি যে,

130. ইলিয়াসের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক!

131. এভাবেই আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

132. সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত।

133. নিশ্চয় লূত ছিলেন রসূলগণের একজন।

134. যখন আমি তাকেও তার পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করেছিলাম;

135. কিন্তু এক বৃদ্ধাকে ছাড়া; সে অন্যান্যদের সঙ্গে থেকে গিয়েছিল।

136. অতঃপর অবশিষ্টদেরকে আমি সমূলে উৎপাটিত করেছিলাম।

137. তোমরা তোমাদের ধ্বংস স্তুপের উপর দিয়ে গমন কর ভোর বেলায়

138. এবং সন্ধ্যায়, তার পরেও কি তোমরা বোঝ না?

139. আর ইউনুসও ছিলেন পয়গম্বরগণের একজন।

140. যখন পালিয়ে তিনি বোঝাই নৌকায় গিয়ে পৌঁছেছিলেন।

141. অতঃপর লটারী (সুরতি) করালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেন।

142. অতঃপর একটি মাছ তাঁকে গিলে ফেলল, তখন তিনি অপরাধী গণ্য হয়েছিলেন।

143. যদি তিনি আল্লাহর তসবীহ পাঠ না করতেন,

144. তবে তাঁকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত মাছের পেটেই থাকতে হত।

145. অতঃপর আমি তাঁকে এক বিস্তীর্ণ-বিজন প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম, তখন তিনি ছিলেন রুগ্ন।

146. আমি তাঁর উপর এক লতাবিশিষ্ট বৃক্ষ উদগত করলাম।

147. এবং তাঁকে, লক্ষ বা ততোধিক লোকের প্রতি প্রেরণ করলাম।

148. তারা বিশ্বাস স্থাপন করল অতঃপর আমি তাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জীবনোপভোগ করতে দিলাম।

149. এবার তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তোমার পালনকর্তার জন্যে কি কন্যা সন্তান রয়েছে এবং তাদের জন্যে কি পুত্র-সন্তান।

150. না কি আমি তাদের উপস্থিতিতে ফেরেশতাগণকে নারীরূপে সৃষ্টি করেছি?

151. জেনো, তারা মনগড়া উক্তি করে যে,

152. আল্লাহ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।

153. তিনি কি পুত্র-সন্তানের স্থলে কন্যা-সন্তান পছন্দ করেছেন?

154. তোমাদের কি হল? তোমাদের এ কেমন সিন্ধান্ত?

155. তোমরা কি অনুধাবন কর না?

156. না কি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোন দলীল রয়েছে?

157. তোমরা সত্যবাদী হলে তোমাদের কিতাব আন।

158. তারা আল্লাহ ও জ্বিনদের মধ্যে সম্পর্ক সাব্যস্ত করেছে, অথচ জ্বিনেরা জানে যে, তারা গ্রেফতার হয়ে আসবে।

159. তারা যা বলে তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।

160. তবে যারা আল্লাহর নিষ্ঠাবান বান্দা, তারা গ্রেফতার হয়ে আসবে না।

161. অতএব তোমরা এবং তোমরা যাদের উপাসনা কর,

162. তাদের কাউকেই তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

163. শুধুমাত্র তাদের ছাড়া যারা জাহান্নামে পৌছাবে।

164. আমাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট স্থান।

165. এবং আমরাই সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান থাকি।

166. এবং আমরাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করি।

167. তারা তো বলতঃ

168. যদি আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কোন উপদেশ থাকত,

169. তবে আমরা অবশ্যই আল্লাহর মনোনীত বান্দা হতাম।

170. বস্তুতঃ তারা এই কোরআনকে অস্বীকার করেছে। এখন শীঘ্রই তারা জেনে নিতে পারবে,

171. আমার রাসূল ও বান্দাগণের ব্যাপারে আমার এই বাক্য সত্য হয়েছে যে,

172. অবশ্যই তারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়।

173. আর আমার বাহিনীই হয় বিজয়ী।

174. অতএব আপনি কিছুকালের জন্যে তাদেরকে উপেক্ষা করুন।

175. এবং তাদেরকে দেখতে থাকুন। শীঘ্রই তারাও এর পরিণাম দেখে নেবে।

176. আমার আযাব কি তারা দ্রুত কামনা করে?

177. অতঃপর যখন তাদের আঙ্গিনায় আযাব নাযিল হবে, তখন যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল, তাদের সকাল বেলাটি হবে খুবই মন্দ।

178. আপনি কিছুকালের জন্যে তাদেরকে উপেক্ষা করুন।

179. এবং দেখতে থাকুন, শীঘ্রই তারাও এর পরিণাম দেখে নেবে।

180. পবিত্র আপনার পরওয়ারদেগারের সত্তা, তিনি সম্মানিত ও পবিত্র যা তারা বর্ণনা করে তা থেকে।

181. পয়গম্বরগণের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।

182. সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত।

Scroll to Top