বেসিক সূরা তথ্য
সূরা নম্বর – 77
আয়াত সংখ্যা – 50
প্রকাশিত শহর – মক্কা
জুজ বিবরণ – জুজ 29 আয়াত 1-50
প্রারম্ভিক পৃষ্ঠা সংখ্যা – 580 তম পৃষ্ঠা
সূরা আল-মুরসালাতের সারাংশ
সূরা আল-মুরসালাত, কুরআনের 77 তম সূরা, একটি মক্কান সূরা যা বিচার দিবসের নিশ্চিততার উপর জোর দেয় এবং আল্লাহর শক্তি এবং মানুষের কর্মের ফলাফলের স্মারক হিসাবে কাজ করে। সূরাতে “আল-মুরসালাত” (প্রেরিত ব্যক্তিদের) উল্লেখ থেকে এর নাম নেওয়া হয়েছে। এটি 50টি শ্লোক নিয়ে গঠিত৷
সূরাটি সেই ফেরেশতাদের বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়েছে যাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিভিন্ন কাজের জন্য পাঠানো হয়। এটি ফেরেশতাদের আজ্ঞাবহ বান্দা হিসাবে চিত্রিত করে যারা বিনা প্রশ্নে আল্লাহর আদেশ পালন করে।
সূরা আল-মুরসালাত মহাবিশ্বে আল্লাহর নিদর্শন এবং প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কে প্রতিফলন এবং চিন্তা করার গুরুত্বের উপর জোর দেয়। এটি মানুষকে আসমান ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করার এবং আল্লাহর জ্ঞান ও ক্ষমতাকে চিনতে আমন্ত্রণ জানায়৷
সূরাটি তাদের ভাগ্যকে তুলে ধরে যারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে এবং অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়। এটি অতীতের জাতির কাহিনী বর্ণনা করে যারা তাদের রসূলদের বিরুদ্ধে অহংকারী এবং সীমালঙ্ঘন করেছিল, যা তাদের আল্লাহর অবাধ্যতার ফলস্বরূপ তাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
সূরা আল-মুরসালাত বিচার দিবস এবং অবিশ্বাসীদের জন্য অপেক্ষা করা শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করে। এটি সেই দিনের ঘটনাগুলিকে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে, যার মধ্যে রয়েছে পৃথিবী কাঁপানো, আকাশ বিদীর্ণ হওয়া এবং বিচারের জন্য আল্লাহর সামনে সমস্ত প্রাণীর সমবেত হওয়া৷
সূরাটি মানুষের কাজের জন্য তাদের জবাবদিহিতার উপর জোর দেয়। এটি জোর দেয় যে বিচারের দিন, মানুষ দুটি দলে বিভক্ত হবে: যারা তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে পায়, যা তাদের সাফল্য ও পরিত্রাণের প্রতীক, এবং যারা তাদের বাম হাতে তাদের আমলনামা গ্রহণ করে, তাদের প্রতীক। ব্যর্থতা এবং শাস্তি।
সূরা আল-মুরসালাত মানবতার জন্য একটি অনুস্মারক এবং পথপ্রদর্শক হিসাবে কুরআনের তাৎপর্য তুলে ধরে শেষ হয়েছে। এটি জোর দেয় যে কুরআন কোন কবি বা জাদুকরের বাণী নয়, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি ঐশ্বরিক উদ্ঘাটন।
সংক্ষেপে, সূরা আল-মুরসালাত বিচার দিবসের নিশ্চিততা এবং মানুষের কর্মের ফলাফলের উপর জোর দেয়। এটি মহাবিশ্বে আল্লাহর নিদর্শনগুলির প্রতি প্রতিফলনের আমন্ত্রণ জানায় এবং সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং অন্যায় কাজে লিপ্ত হওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করে। সূরায় বিচার দিবসের ঘটনাবলী এবং মানুষের কৃতকর্মের জবাবদিহিতা বর্ণনা করা হয়েছে। এটি একটি ঐশ্বরিক প্রত্যাদেশ হিসাবে কুরআনের তাৎপর্যের উপর জোর দেয়।
বাংলায় সূরা আল-মুরসালাত এর অনুবাদ পড়ুন
1. কল্যাণের জন্যে প্রেরিত বায়ুর শপথ,
2. সজোরে প্রবাহিত ঝটিকার শপথ,
3. মেঘবিস্তৃতকারী বায়ুর শপথ
4. মেঘপুঞ্জ বিতরণকারী বায়ুর শপথ এবং
5. ওহী নিয়ে অবতরণকারী ফেরেশতাগণের শপথ-
6. ওযর-আপত্তির অবকাশ না রাখার জন্যে অথবা সতর্ক করার জন্যে।
7. নিশ্চয়ই তোমাদেরকে প্রদত্ত ওয়াদা বাস্তবায়িত হবে।
8. অতঃপর যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে,
9. যখন আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে,
10. যখন পর্বতমালাকে উড়িয়ে দেয়া হবে এবং
11. যখন রসূলগণের একত্রিত হওয়ার সময় নিরূপিত হবে,
12. এসব বিষয় কোন দিবসের জন্যে স্থগিত রাখা হয়েছে?
13. বিচার দিবসের জন্য।
14. আপনি জানেন বিচার দিবস কি?
15. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
16. আমি কি পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করিনি?
17. অতঃপর তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করব পরবর্তীদেরকে।
18. অপরাধীদের সাথে আমি এরূপই করে থাকি।
19. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
20. আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি?
21. অতঃপর আমি তা রেখেছি এক সংরক্ষিত আধারে,
22. এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত,
23. অতঃপর আমি পরিমিত আকারে সৃষ্টি করেছি, আমি কত সক্ষম স্রষ্টা?
24. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
25. আমি কি পৃথিবীকে সৃষ্টি করিনি ধারণকারিণীরূপে,
26. জীবিত ও মৃতদেরকে?
27. আমি তাতে স্থাপন করেছি মজবুত সুউচ্চ পর্বতমালা এবং পান করিয়েছি তোমাদেরকে তৃষ্ণা নিবারণকারী সুপেয় পানি।
28. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
29. চল তোমরা তারই দিকে, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে।
30. চল তোমরা তিন কুন্ডলীবিশিষ্ট ছায়ার দিকে,
31. যে ছায়া সুনিবিড় নয় এবং অগ্নির উত্তাপ থেকে রক্ষা করে না।
32. এটা অট্টালিকা সদৃশ বৃহৎ স্ফুলিংগ নিক্ষেপ করবে।
33. যেন সে পীতবর্ণ উষ্ট্রশ্রেণী।
34. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
35. এটা এমন দিন, যেদিন কেউ কথা বলবে না।
36. এবং কাউকে তওবা করার অনুমতি দেয়া হবে না।
37. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
38. এটা বিচার দিবস, আমি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে একত্রিত করেছি।
39. অতএব, তোমাদের কোন অপকৌশল থাকলে তা প্রয়োগ কর আমার কাছে।
40. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
41. নিশ্চয় খোদাভীরুরা থাকবে ছায়ায় এবং প্রস্রবণসমূহে-
42. এবং তাদের বাঞ্ছিত ফল-মূলের মধ্যে।
43. বলা হবেঃ তোমরা যা করতে তার বিনিময়ে তৃপ্তির সাথে পানাহার কর।
44. এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
45. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
46. কাফেরগণ, তোমরা কিছুদিন খেয়ে নাও এবং ভোগ করে নাও। তোমরা তো অপরাধী।
47. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
48. যখন তাদেরকে বলা হয়, নত হও, তখন তারা নত হয় না।
49. সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
50. এখন কোন কথায় তারা এরপর বিশ্বাস স্থাপন করবে?